মহাবিশ্বে কতগুলো গ্যালাক্সি আছে? জানুন সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সির নাম!

 মহাবিশ্ব এক বিশাল রহস্যময় জগৎ, যেখানে অসংখ্য গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ ছড়িয়ে আছে। রাতের আকাশে যে অসংখ্য তারকা আমরা দেখি, সেগুলো আসলে বিভিন্ন গ্যালাক্সির অংশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মহাবিশ্বে আসলে কতগুলো গ্যালাক্সি রয়েছে?


মহাবিশ্বে কতগুলো গ্যালাক্সি আছে?


গ্যালাক্সি কী?

গ্যালাক্সি হলো তারকা, গ্যাস, ধুলো এবং অন্ধকার পদার্থের একটি সুবিশাল সমষ্টি, যা মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে একত্রে থাকে। আমাদের পৃথিবী যেখানে অবস্থিত, সেই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিও এমনই একটি গ্যালাক্সি।

মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা

বর্তমান গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে মহাবিশ্বে কমপক্ষে দশ হাজার কোটি (100 বিলিয়ন) গ্যালাক্সি রয়েছে। 

তবে, এই সংখ্যা স্থির নয়, কারণ আধুনিক টেলিস্কোপ ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে নতুন নতুন গ্যালাক্সি আবিষ্কৃত হচ্ছে। নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ও জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মতো উন্নত যন্ত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আরও বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন।

কিভাবে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়?

বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের গ্যালাক্সির সংখ্যা নির্ধারণের জন্য হাবল ডিপ ফিল্ড (Hubble Deep Field) পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করেন।  


এই পদ্ধতিতে, মহাবিশ্বের একটি ছোট্ট অংশকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে সেখানে কয়েক হাজার গ্যালাক্সি রয়েছে। সেই পরিসংখ্যান ব্যবহার করে পুরো মহাবিশ্বের গ্যালাক্সির সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।

মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সির নাম

বর্তমানে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সির নাম অ্যালসিওনিয়াস (Alcyoneus)। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি বিশাল রেডিও গ্যালাক্সি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫.৪ মেগাপারসেক বা ১৬.৪৪ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। 

অ্যালসিওনিয়াস আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চেয়ে প্রায় ১০০ গুণ বড়। গ্রীক পুরাণে আকাশের দেবতা ওরানোসের পুত্রের নামানুসারে এই গ্যালাক্সির নামকরণ করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ অনুসন্ধান

নতুন গবেষণা এবং আরও শক্তিশালী টেলিস্কোপের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে মহাবিশ্বে প্রায় দুই ট্রিলিয়ন (2 ট্রিলিয়ন) গ্যালাক্সি থাকতে পারে। অর্থাৎ, আমাদের মহাবিশ্ব আমাদের কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি বিশাল ও জটিল।

মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এটি ১০০ বিলিয়ন থেকে ২ ট্রিলিয়নের মধ্যে হতে পারে। 

তবে, ভবিষ্যতে নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে এই সংখ্যা আরও পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের রহস্য উদঘাটনে বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, আর আমরা আরও বিস্ময়কর তথ্য জানতে পারব।

 আরও পড়ুনঃ 

* পৃথিবীর বাইরে জীবন? মহাকাশের অজানা তথ্য

* মহাবিশ্বের বেশির ভাগ এলাকাই অন্ধকার কেন

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url