হার্টকে সুস্থ রাখতে হলে খাবারে কি পরিবর্তন আনবেন?

একটি সুস্থ হৃদয় আমাদের সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু প্রতিদিনের খাবারের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য। সঠিক খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদযন্ত্রের সুষ্ঠু কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। আসুন জেনে নেই, হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কী ধরনের খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা উচিত এবং কোন খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।

হার্টকে সুস্থ রাখতে হলে খাবারে কি পরিবর্তন আনবেন


হার্ট  সুস্থ রাখতে তাজা শাক-সবজি ও ফলমূল

শাক-সবজি ও ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে পালং শাক, ব্রোকোলি, আপেল, কমলা, বেরি ইত্যাদি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই খাবারগুলিতে কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার থাকায় এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।

স্বাস্থ্যকর চর্বি বাছাই করুন

খাবারে অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন অলিভ অয়েল, বাদাম, অ্যাভোকাডো, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (মাছের তেল) ইত্যাদি হার্টের জন্য ভালো।  


এই ধরনের চর্বি রক্তনালীকে স্বাস্থ্যকর রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। তবে সম্পৃক্ত চর্বি যেমন মাখন, ঘি, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি কম খাওয়া উচিত।

প্রোটিনের ভালো উৎস নির্বাচন করুন

প্রোটিন শরীরের গঠন ও সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক। তবে প্রোটিনের উৎস হিসেবে বেশি পরিমাণে লাল মাংস না খেয়ে মাছ, ডাল, বাদাম, সয়া, এবং দুধ ও দুধজাত খাবার গ্রহণ করা ভালো। বিশেষ করে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ যেমন স্যামন, টুনা, ট্রাউট হার্টের জন্য বিশেষ উপকারী।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ওটমিল, ব্রাউন রাইস, বার্লি, লাল আটার রুটি, এবং শাক-সবজি থেকে প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায়। এগুলি পেট ভরাট রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতাও কমায়।

চিনি এবং প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন

অতিরিক্ত চিনি এবং প্রসেসড খাবার খেলে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, কোমল পানীয়, মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।

অ্যালকোহল এবং ধূমপান এড়ানো

অ্যালকোহল ও ধূমপান হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। অ্যালকোহল রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। সুতরাং হার্ট সুস্থ রাখতে এগুলো একেবারে বাদ দেওয়া উচিত।

পানি পানের পরিমাণ বাড়ান

শরীর হাইড্রেটেড রাখার মাধ্যমে হৃদয়ের ওপর চাপ কমে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান হার্টের জন্য উপকারী।

সঠিক পরিমাণে লবণ ব্যবহার

অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, যা হার্টের ক্ষতি করে। প্রতিদিন ৫-৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।

সুস্থ হৃদয়ের জন্য নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখলে হার্ট সুস্থ থাকবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখার জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শও নেয়া প্রয়োজন।


আরও পড়ুনঃ  


Next Post Previous Post