মহাকাশ সম্পর্কে অজানা তথ্য-মহাকাশ বিজ্ঞান


মহাকাশ-সম্পর্কে-অজানা-তথ্য-মহাকাশ-বিজ্ঞান

পৃথিবী মানবজাতির আবাসস্থল। পৃথিবীর চারদিকে ঘিরে রয়েছে অসীম মহাকাশ। মহাকাশ সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানি না।

সেগুলেু মহাকাশ বিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়েছে। সৌরজগতের কেন্দ্রে সূর্য রয়েছে। মহাকাশে এরূপ বহু নক্ষত্র রয়েছে। পাশাপাশি চন্দ্র (উপগ্রহ), পৃথিবী (গ্রহ), ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা প্রভৃতি রয়েছে।

ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও ধূলিকণা থেকে শুরু করে আমাদের এই পৃথিবী, দূর-দূরান্তের সকল জ্যোতিষ্ক এবং দেখা না দেখা সবকিছু নিয়েই মহাবিশ্ব।

মহাকাশ বিজ্ঞান

সূর্য একটি নক্ষত্র এবং চাঁদ একটি উপগ্রহ। এই আকাশের শুরু ও শেষ নেই। আদি-অন্ত্রহীন এ আকাশকে মহাকাশ বলে। মহাকাশ বিজ্ঞান এ এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

মহাকাশে অসংখ্য জ্যোতিষ্ক রয়েছে। এরা সুশৃঙ্খলভাবে নিজস্ব কক্ষপতে নির্দিষ্ট গতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে কোনো কোনোটার আলো আছে আবার কোনো কোনোটার আলো নেই।

মহকাশে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা, পালসার, কৃষ্ণবামন, কৃষ্ণগহ্বর প্রভৃতি সবকিছুই রয়েছে। এদের সবাইকে নিয়ে গঠিত হয়েছে মহাবিশ্ব।

মহাবিশ্ব যে কত বড় তা কেউ জানে না। কেউ জানে না মহাবিশ্বের আকার বা আকৃতি কেমন, অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন মহাবিশ্বের শুরু ও শেষ নেই।

আবার কেউ কেউ এখনও বিশ্বাস করেন মহাবিশ্বের আকার ও আকৃতি অজানা রয়ে গেছে। এই অজানা হয়তো চিরকালই থাকবে।

নক্ষত্র কি?

যেসব জ্যোতিষ্কের নিজের আলো আছে তাদের নক্ষত্র বলে। মহাকাশে অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে। খালি চোখে আমরা মাত্র কয়েক হাজার নক্ষত্র দেখতে পাই।

এদের কয়েকটি পৃথিবী থেকে শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়। নক্ষত্রগুলো হলো জ্বলন্ত গ্যাসপিন্ড, এরা হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে তৈরি।

এই গ্যাস অতি উচ্চ (প্রায় ৬০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় জ্বলছে। সূর্যের প্রখর আলোর জন্য দিনের বেলায় অন্যান্য নক্ষত্র দেখা যায় না।

পৃথিবী থেকে দেখলে মনে হয় নক্ষত্রগুলো যেন একই সমতলে অবস্থান করছে। পৃথিবী ও নক্ষত্রদের মধ্যে এবং নক্ষত্রদের পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব এত বেশি যে কিলোমিটার দ্বারা এই দূরত্ব প্রকাশ করা যায় না।

আলো প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এই বেগে এক বছরে আলো যে পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে এক আলোব বর্ষ বলে।

সূর্য পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র। সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড। সুর্যের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেনটোরাই। প্রথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায়

৪.২ আলোক বর্ষ। *মহাকাশের নক্ষত্র গুলোকে দেখতে এখানে ক্লিক করুন*

নক্ষত্রমন্ডলী : মেঘমুক্ত অন্ধকার রাতে আকাশের দিকে তাকালে মনে হয় কয়েকটি নক্ষত্র বিশেষ আকৃতিতে মিলে জোট বেঁধেছে। এভাবে আমাদের পরিচিত আকৃতিতে নক্ষত্রদলকে নক্ষত্রমন্ডলী বলে।

প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এক একটি নক্ষত্রদলকে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যুক্ত করে বিভিন্ন আকৃতি কল্পনা করে বিভিন্ন নাম দিয়েছেন।

এদের কোনোটা দেখতে ভল্লুকের মতো, কোনোটা শিকারির মতো। এদের মধ্যে সপ্তর্ষিমন্ডল, কালপুরষ, ক্যাসিওপিয়া, লঘুসপ্তর্ষি, বৃহৎ কুক্কুরমন্ডল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

গ্যালাক্সি কি? মহাকাশ বিজ্ঞান

মহাকাশে গ্রহ, নক্ষত্র, ধূলিকণা, ধূমকেতু ও বাষ্পকুন্ডের এক বিশাল সমাবেশকে গ্যালাক্সি বা নক্ষত্রজগৎ বলে। মহাকাশে একশত বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে।

এদের বিভিন্ন আকার ও আকৃতি রয়েছে, তবে এদের অধিকাংশই সর্পিলাকার বা উপবৃত্তাকার। সর্পিলাকার গ্যালাক্সিগুলো বৃহৎ আকৃতির এবং উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিগুলো বেশি উজ্জ্বল।

এরা পরস্পর ব্যাপক ব্যবধানে অবস্থিত। কোনো একটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র অংশকে ছায়াপত বলে।

নীহারিকা : নীহারিকা হলো মহাকাশে অসংখ্য স্বল্পালোকিত তারকার আস্তরণ। এদের আকার বিচিত্র। কিছু নীহারিকার দেহ গ্যাসীয় পদার্থে পূর্ণ।

এদেরকে গ্যাসীয় নীহারিকা বলে। এক একটি নীহারিকার মধ্যবর্তী দূরত্ব ব্যাপক। এক একটি নীহারিকার মাঝে কোটি কোটি নক্ষত্র থাকতে পারে।

এরা যেহেতু পৃথিবী থেকে কোটি কোটি আলোক বর্ষ দূরে রয়েছে, তাই এদের মাঝে যেসব নক্ষত্র রয়েছে তাদের পৃথকভাবে শনাক্ত করা যায় না।

ছায়াপথ কি? : কোনো একটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র অংশকে ছায়াপথ বা আকাশ গঙ্গা বলে। অন্ধকার আকাশে এদর উজ্জ্বল দীপ্তি দীর্ঘপথের মতো দেখায়।

একটি ছায়াপথ লক্ষ কোটি নক্ষত্রের সমষ্টি। শীতকালে রাত্রিবেলা পরিষ্কার আকাশে লক্ষ করলে উত্তর-দক্ষিণে বেশ বড় পরিসরযুক্ত তেজোদ্দীপ্ত স্বচ্ছ দীর্ঘ আলোর রেখা দেখা যায়।

তারকা খচিত এই আলোর পথই হলো ছায়াপথ। বিজ্ঞানীরা একে বিরাট চক্রাকার মন্ডল বলে অনুমান করেন। সৌরজগৎ এরকম একটি ছায়াপথের অন্তর্গত।

উল্কা কি: রাতের মেঘমুক্ত আকাশে অনেক সময় মনে হয় যেন নক্ষত্র ছুটে যাচ্ছে বা কোনো নক্ষত্র যেন এই মাত্র খসে পড়ল। এই ঘটনাকে নক্ষত্রপতন বা তারা খসা বলে।

এরা কিন্তু আসলে কোনো নক্ষত্র নয়, এদের নাম উল্কা। মহাশুন্যে অজস্র জড়পিন্ড ভেসে বেড়ায়। এই জড়পিন্ডগুলো অভিকর্ষ বলের আকর্ষণে প্রচন্ড গতিতে (সেকেন্ড প্রায় ৩ কিলোমিটার) পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে।

বায়ুর সংস্পর্শে এসে বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে এরা জ্বলে ওঠে। ফলে এদের ছুটন্ত তারা বলে মনে হয়। বেশিরভাগ উল্কাপিন্ডই আকারে বেশ ক্ষুদ্র।

ধূমকেতু : মহাকাশে মাঝে মাঝে একপ্রকার জ্যোতিষ্কের আবির্ভাব ঘটে। এদের একটি মাথা ও একটি লেজ আছে। এসব জ্যোতিষ্ককে ধূমকেতু বলে। ধূমকেতু আকাশের এক অতি বিষ্ময়কর জ্যোতিষ্ক।

সৌরজগতের মধ্যে ধুমকেতুর বসবাস হলেও এরা কিছুদিনের জন্য উদয় হয়ে আবার অদৃশ্য হয়ে যায়। সূর্যের চারদিকে অনেক দূর দিয়ে এরা পরিক্রমণ করে।

সূর্যের নিকটবর্তী হলে এদের আবার দেখা যায়। এরা সূর্যের যত কাছাকাছি আসতে থাকে তত এর লেজ লম্বা হতে থাকে। এরা অনেক দীর্ঘ কক্ষপথে সূর্যকে পরিক্রমণ করে বলে অনেক বছর পর পর

এরা আবির্ভূত হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি যে ধূমকেতু আবিষ্কার করেন তা হ্যালির ধূমকেতু নামে পরিচিত। হ্যালির ধূমকেতু প্রতি ৭৬ বছরে একবার দেখা যায়।

হ্যালির ধূমকেতু ২৪০ খ্রিষ্টপূর্ব অব্দ থেকে দেখা যায় এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে হ্যালির ধূমকেতু দেখা গেছে।

গ্রহ কি: মহাকাশে কতগুলো জ্যোতিষ্ক সূর্যকে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পথে পরিক্রমণ করে। এদের নিজেদের কোনো আলো বা তাপ নেই। মহাকর্ষ বলের প্রভাবে এরা সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

এরা সূর্য থেকে আলো ও তাপ পায়। এই তাপেই উত্তপ্ত হয়। এরা তারার মতো মিটমিট করে জ্বলে না। এসব জ্যোতিষ্ককে গ্রহ বলে। আমাদের সৌরজগতের আটটি গ্রহ হলো বুধ, শুক্র, পৃথিবী,

মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নপচুন।

উপগ্রহ কি: কিছু কিছু জ্যোতিষ্ক গ্রহকে ঘিরে আবর্তিত হয়, এদের উপগ্রহ বা চাঁদ বলে। মহাকর্ষ বলের প্রভাবে এরা গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এদের নিজস্ব আলো বা তাপ নেই।

এরা সূর্য বা নক্ষত্র থেকে আলো বা তাপ পায়। চাঁদ পৃথিবী গ্রহের একমাত্র উপগ্রহ। কোনো কোনো গ্রহের উপগ্রহ আছে, কোনোটির নেই। বুধ ও শুক্রের কোনো উপগ্রহ নেই।

বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন উপগ্রহ আবিষ্কৃত হচ্ছে।

সৌরজগৎ কি?

সূর্য এবং তার গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ, অসংখ্য ধূমকেতু ও অগণিত উল্কা নিয়ে সৌরজগৎ গঠিত। সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। গ্রহগুলো মহাকর্ষ বলের প্রভাবে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে।


সৌরজগতের যাবতীয় গ্রহ-উপগ্রহের নিয়ন্ত্রক হলো সূর্য। সূর্যকে ভিত্তি করে সৌরজগতের যাবতীয় কাজ-কর্ম চলে। এই মহাবিশ্বের বিশালতার মধ্যে সৌরজগৎ নিতান্তই ছোট।

সূর্য : সূর্য একটি নক্ষত্র। এটি একটি মাঝারি আকারের হলুদ বর্ণের নক্ষত্র। এর ব্যাস প্রায় ১৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার এবং ভর প্রায় ১.৯৯x১০ কিলোগ্রাম।

এটি সৌরজগতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতিষ্ক। সূর্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ট। পৃথিবী, অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহের তাপ ও আলোর মূল উৎস সূর্য।

সুর্যের আলো ছাড়া পৃথিবী চির অন্ধকার থাকত এবং পৃথিবীতে জীবজগৎ ও উদ্ভিদজগতের কিছুই বাঁচত না। সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘরছে আটটি গ্রহ।

সূর্য থেকে গ্রহগুলো দূরত্ব অনুযায়ী পর পর যেভাবে রয়েছে তা হলো বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। গৃহদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বৃহস্পতি

এবং ছোট বুধ। বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি বেশ উজ্জ্বল এবং কোনো যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই দেখা যায়। ইউরেনাস ও নেপচুন এতটা কম উজ্জ্বল যে দূরবীক্ষণ ছাড়া এদের দেখা যায় না।

বুধ গ্রহের বর্ণনা: বুধ সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ। সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব ৫.৮ কোটি কিলোমিটার; এর ব্যাস ৪,৮৫০ কিলোমিটার।

সূর্যের খুব কাছাকাছি থাকায় সূর্যের আলোর তীব্রতার কারণে সবসময় একে দেখা যায় না। সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে বুধের সময় লাগে ৮৮ দিন। সুতরাং বুধ গ্রহে ৮৮ দিনে এক বছর হয়।

বুধের মাধ্যাকর্ষণ বল এত কম যে এটি কোনো বায়ুমন্ডল ধরে রাখতে পারে না। এখানে নেই মেঘ, বৃষ্টি, বাতাস ও পানি। সুতরাং প্রাণীর অস্তিত্ব নেই।

১৯৭৪ সালে মার্কিন মহাশূন্যযান মেরিনার-১০ বুধের যে ছবি পাঠায় তা থেকে দেখা যায় যে, বুধের উপরিতল একদম চাঁদের মতো। ভূত্বক অসংখ্য গর্তে ভরা, এবড়ো-থেবড়ো।

এখানে আছে অসংখ্য পাহার ও সমতলভূমি। বুধের কোনো উপগ্রহ নেই।

শুক্র গ্রহরে বর্ণনা : বুধের মতো শুক্র গ্রহকেও ভোরের আকাশে শুকতারা এবং সন্ধ্যার আকাশে সন্ধ্যাতারা হিসেবে দেখা যায়। শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা আসলে কোনো তারা নয়।

কিন্তু নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করে বলেই আমরা একে ভুল করে তারা বলি। শুক্র গ্রহটি ঘন মেঘে ঢাকা। তাই এর উপরিভাগ থেকে সূর্যকে কখনই দেখা যায় না।

শুক্রের মেঘাচ্ছন্ন বায়ুমন্ডল প্রধানত কার্বন ডাইঅক্সাইডের তৈরি। এটি সৌরজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও সবচেয়ে উত্তপ্ত গ্রহ। সূর্য থেকে শুক্র গ্রহের দূরত্ব ১০.৮ কোটি কিলোমিটার।

এর দিন ও রাতের মধ্যে আলোর বিশেষ কোনো তারতম্য হয় না। এখানে বৃষ্টি হয় তবে এসিড বৃষ্টি। শুক্রের ব্যাস ১২,১০৪ কিলোমিটার। সূর্যকে ঘুরে আসতে শুক্রের সময় লাগে ২২৫ দিন।

সুতরাং শুক্রে ২২৫ দিনে এক বছর। শুক্রের কোনো উপগ্রহ নেই। সকল গ্রহ এদের নিজ অক্ষের উপর পশ্চিম থেকে পূর্বে পাক খেলেও একমাত্র শুক্র গহ পূর্ব থেকে পশ্চিমে পাক খায়।

পৃথিবী গ্রহের বর্ণনা : পৃথিবী আমাদের বাসভুমি। এটি সূর্যের ভৃতীয় নিকটতম গ্রহ। সূর্য থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার। এর ব্যাস প্রায় ১২.৬৬৭ কিলোমিটার।

পৃথিবী একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। তাই এখানে ৩৬৫ দিনে এক বছর। চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ।

পৃথিবী একমাত্র গ্রহ যার বায়ুমন্ডলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও তাপমাত্রা রয়েছে যা উদ্ভিদ ও জীবজন্তু বসবাসের উপযোগী। সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে একমাত্র

পৃথিবীতেই প্রাণের অস্তিত্ব আছে।

মঙ্গল গ্রহের বর্ণনা : মঙ্গল পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী। বছরের অধিকাংশ সময় একে দেখা যায়। খালি চোখে মঙ্গল গ্রহকে লালচে দেখায়। সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব ২২.৮ কোটি কিলোমিটার।

এর ব্যাস ৬,৭৮৭ কিলোমিটার, পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় অর্ধেক। এই গ্রহে দিনরাত্রির পরিমাণ পৃথিবীর প্রায় সমান। সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরতে মঙ্গলের সময় লাগে ৬৮৭ দিন।

মঙ্গল গ্রহের উপরিভাগে রয়েছে গিরিখাত ও আগ্নেয়গিরি। এ গ্রহে অক্সিজেন ও পানির পরিমাণ খুবই কম এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ এত বেশি যে প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়।

মঙ্গলে ফোবস ও ডিমোস নামে দুটি উপগ্রহ রয়েছে।

বৃহস্পতি গ্রহের বর্ণনা : বৃহস্পতি সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ। একে গ্রহরাজ বলে। এর ব্যাস ১,৪২,৮০০ কিলোমিটার। আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে ১,৩০০ গুণ বড়।

এটি সূর্য থেকে প্রায় ৭৭.৮ কোটি কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। তাই পৃথিবীর সাতাশ ভাগের একভাগ তাপ পায়। বৃহস্পতির বায়ুমন্ডল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে তৈরি।

বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে তাপমাত্রা খুবই কম এবং অভ্যন্তরের তাপমাত্রা অভ্যস্ত বেশি। সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে বৃহস্পতির সময় লাগে ৪.৩৩১দিন। বৃহস্পতির উপগ্রহের সংখ্যা ৬৭টি। এ গ্রহে জীবের অস্তিত্ব নেই।

শনি গ্রহের বর্ণনা: শনি সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে এর দূরত্ব ১৪৩ কোটি কিলোমিটার। এটি গ্যাসের তৈরি বিশাল এক গোলক। এর ব্যাস ১,২০,০০০ কিলোমিটার।

শনির ভূত্বক বরফে ঢাকা। এর বায়ুমন্ডলে আছে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মিশ্রণ, মিথেন ও অ্যামোনিয়া গ্যাস। সূর্যের চারদিকে একবার ঘরতে শনির সময় লাগে পৃথিবীর প্রায় ২৯.৫ বছরের সমান।

শনি উজ্জ্বল বলয় দ্বারা বেষ্টিত এবং এর ৬২টি উপগ্রহ আছে।

ইউরেনাস গ্রহের বর্ণনা : ইউরেনাস সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। এ গ্রহটি সূর্য থেকে ২৮৭ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে এ গ্রহের সময় লাগে ৮৪ বছর।

এ গ্রহের গড় ব্যাস ৪৯,০০০ কিলোমিটার। এ গ্রহটি হালকা পদার্থ দিয়ে গঠিত, আবহামন্ডলে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ অধিক।

শনির মতো ইউরেনাসেরও কয়েকটি বলয় আবিষ্কৃত হয়েছে, তবে শনির বলয়ের ন্যায় এ বলয়গুলো উজ্জ্বল নয়। এর উপগ্রহ সংখ্যা ২৭ টি।

নেপচুন গ্রহের বর্ণনা : সূর্য থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪৫০ কোটি কিলোমিটার। এখানে সূর্যের আলো ও তাপ খুব কম। এর ব্যাস ৪৮,৪০০ কিলোমিটার। এ গ্রহ আয়তনে প্রায়

৭২টি পৃথিবীর সমান এবং ভর ১৭টি পৃথিবীর ভরের সমান। এর বায়ুমন্ডলে বেশিরভাগই মিথেন অ্যামোনিয়া গ্যাস। এর উপগ্রহ সংখ্যা ১৪ টি।

আরও পড়ুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url