মাল্টিমিডিয়া কী? মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারের সুবিধা
মাল্টি শব্দের অর্থ বহু এবং মিডিয়া শব্দের অর্থ মাধ্যম। অর্থাৎ মাল্টিমিডিয়া শব্দের অর্থ হলো বহুমাধ্যম।
মাল্টিমিডিয়া এমন একটি সমন্বিত ব্যবস্থা যাতে একাধিক মিডিয়া যেমনঃ টিভি, কম্পিউটার, টেলিফোন ও অন্যান্য উন্নত আরো কিছু প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সচল, সজীব ও আকর্ষণীয় কম্পিউটার ভুবন তৈরি করা যায়।
সাধারণত কম্পিউটারের সাথে অতিরিক্ত কিছু হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার যুক্ত করে কম্পিউটারে কাজ করার পাশাপাশি ছবি দেখা, গান শোনা ইত্যাদি কাজ করা যায়।
একই যন্ত্র দিয়ে এরূপ বহুবিধ কাজ করা যায় বলে একে মাল্টিমিডিয়া বলে।
মাল্টিমিডিয়া কত প্রকার ও কী কী
মাল্টিমিডিয়া সাধারণ পাচঁ প্রকার যথা,
- লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া
- নন-লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া
- হাইপার মাল্টিমিডিয়া
- ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া
লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়াঃ যেসব মাল্টিমিডিয়া সময়ের উপর নির্ভরশীল তাদেরকে লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া বলে। লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া সময়কে অতিক্রম করে এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে চলতে থাকে।
এ ধরনের মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহারকারী টেক্সট, গ্রাফিক্স ইত্যাদিকে নিয়ন্ত্রণের তেমন সুযোগ পান না। যেমনঃ অডিও, ভিডিও ইত্যাদি।
নন-লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়াঃ যেসব মাল্টিমিডিয়া সময়ের উপর নির্ভরশীল নয় তাদেরকে নন-লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া বলে। নন-লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া পর্যায়ক্রমিক না হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তনশীল হয়ে থাকে।
যেমনঃ লেখা বা টেক্সট ইমেজ ইত্যাদি। নন-লিনিয়ার মাল্টিমিডিয়া আবার দুই প্রকার- হাইপার মিডিয়া, ইন্টারঅ্যাকটিভ
হাইপার মাল্টিমিডিয়া হাইপার মিডিয়া ব্যবহার মূলত ইন্টারনেট ওয়েবসাইটগুলোতে হয়ে থাকে। ইন্টারনেট ওয়েবসাইটগুলোতে বিপুল পরিমাণ তথ্য উপস্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়। ব্যবহারকারী প্রয়োজন অনুযায়ী কোন বিষয়কে নির্বাচন করতে পারে।
ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়াঃ ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিয়ার ব্যবহারই বর্তমান সবচেয়ে বেশি। এ ধরনের মাল্টিমিডিয়ায় একজ ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণ থাকে সর্বাধিক। কোনো ছবি, ভিডিও ইমেজ বা শব্দ নিজের ইচ্ছা মতো নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই।
মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারের সুবিধা
তথ্য প্রযুক্তি উৎকর্ষতার সাথে সাথে মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তিতে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রধান একটি বৈশিষ্ট হলো বহুমাধ্যমের সমাবেশ।
মাল্টিমিডিয়ায় একই সাথে লেখালেখি, চিত্রাঙ্কন, শব্দ সংযোজন, স্থির চিত্র কিংবা চলচ্চিত্র উপস্থাপনা ইত্যাদি কাজ করা যায়, যা অন্য কোনো মাধ্যমে সম্ভব নয়।
নিম্নে মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ
বিনোদনঃ মাল্টিমিডিয়া বিনোদনে এনেছে নতুন দিগন্ত। এক্ষেত্রে বিশেষ করে কম্পিউটার গেমস, কম্পিউটারের সাহায্যে গান শোনা বা ছবি দেখা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষাক্ষেত্রঃ শব্দ, বর্ণ, চিত্র ইত্যাদির সমন্বয়ে এক বর্নিল শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রশিক্ষনে এবং অনলাইনের সাহায্যে শিক্ষা গ্রহণ বা কোর্স চালু ইত্যাদি কাজে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার এনে দিয়েছে এক নতুন দিগন্ত।
আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে চক, ডাস্টার, ব্লাকবোর্ড, খাতা-কলম, পেন্সিল দিয়ে লেখাপড়া। কম্পিউটার প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছে।
চক, ডাস্টার, ইত্যাদির পরিবর্তে কম্পিউটার দিয়েছে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা।
বাণিজ্যেঃ কোন পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপন কিংবা বিস্তারিত তথ্য এখন মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যারেই প্রকাশ করা হয়। এছাড়া ই-কমার্সের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান তার পণ্যের সরবরাহের অর্ডার দিতে এবং নিতে পারে।
আরও পড়ুন