কম্পিউটারের বা ল্যাপটপের গতি বাড়ানোর উপায় এবং কম্পিউটার হ্যাং এর সমাধান

ল্যাপটপের গতি বাড়ানোর উপায়

কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায়ঃ

বর্তমান সময়ে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আমাদের নিত্য প্রয়োজনে একটি গুরুত্বপুর্ন্য ডিভাইস। প্রত্যেক দিন আমরা নানা কাজে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকি। নতুন অবস্থায় কম্পিউটার অনে দ্রুত কাজ করে, কিন্তু কিছুদিন ব্যবহারের পর হ্যাং করে বা স্লো কাজ করে।

যার ফলে কিছুদিন পর পর নতুন করে উইন্ডোজ দিতে হয়। যার ফলে আমাদের অনেক সময় ও শ্রম অপচয় হয়। আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কিভাবে আপনার কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করবেন।

অনেক কারণে কম্পিউটারের গতি কমে যায়, যেমন টেম্পরারি ফাইল, ভাইরাস, হার্ড ডিস্ক ফুল হয়ে যাওয়ার কারণে, কম্পিউটারের কনফিগারেশন কম থাকলে, ভারি কোন সফটওয়ার ইনস্টল করে ব্যবহার করলে কম্পিউটারের গতি হ্রাস পায়।
এছাড়াও অনেকদিন কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে অনেক টেম্পরারি ফাইল বা অপ্রয়োজনীয় ফাইল হার্ডডিস্কে জমা হয় যার কারণে কম্পিউটার স্লো  হয়ে যায়।

আমরা যখন বিভিন্ন প্রোগ্রাম ব্যবহার করি তখন অনবরত বিভিন্ন টেম্পরারি ফাইল তৈরি হয়, যা ঐ প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন পরে।  প্রোগ্রামটি বন্ধ করার পরও স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসব টেম্পোরারি ফাইল ডিলিট হওয়ার কথা থাকলেও এসব অপ্রয়োজনীয় ফাইল হার্ডডিস্কের একটি অংশ দখল করে রাখে। তাই এসব টেম্পোরারি ফাইল ডিলিট করলে হার্ডডিস্কের ফ্রি স্পেস বৃদ্ধি পায়, ফলে কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি পাবে।
 
টেম্পোরারি ফাইল গুলো ডিলিট করার জন্য Start মেনু থেকে Windows key+R প্রেস করুন। Run ডায়লগ বক্স ওপেন হবে, এতে  ‘temp’ লিখে Enter প্রেস করুন। temp নামের একটি উইন্ডো ওপেন হবে, এত প্রদর্শিত সব ফাইল ডিলিট করে দিন।

কম্পিউটারের গতি কমে যাওয়ার কারণ

এছাড়াও আমরা যখন কম্পিউটার অন করি সাথে সাথে অনেক গুলো প্রোগ্রাম অন হয়। সেগুলোর কারণেও কম্পিউটারের সার্টআপ টাইম বেশি লাগে। ‍স্টার্টআপ এ কোন কোন প্রোগ্রাম লোড হয়েছে তা দেখার জন্য Start মেনু থেকে Run-এ ক্লিক করুন অথবা শর্টকাট কি Windows key+R প্রেস করুন
 
একটি ডায়ালগ বক্স আসবে এর টেক্সট বক্সে টাইপ করুন `Configure’ এবার ok বাটনে ক্লিক করুন। System Configuration utility নামের একটি উইন্ডো ওপেন হবে। এবার উইন্ডোটির startup ট্যাবে ক্লিক করুন।
 
কম্পিউটার স্টার্ট হওয়ার সময় যত প্রোগ্রাম লোড হয় তার একটি লিস্ট দেখা যাবে। প্রতিটি প্রোগ্রামের নামের বাম পাশে টিকচিহ্ন দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এথান থেকে অপ্রয়োজনীয় ফাইল গুলো আনচেক করে দিন। (এখানে যে পদ্ধতিটি বলা হয়েছে তা সকল উইন্ডোজে কাজ নাও করতে পারে।
 
ভাইরাসের কারণেও কম্পিউটার স্লো অথবা হ্যাং করে। তাই ভাইরাস মুক্ত রাখার জন্য ভাল মানের এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। এবং নিয়মিত কম্পিউটার স্ক্যান করতে হবে। বর্তমানের লেটেশ এন্টিভাইরাসে ডিস্ক ক্লিন আপ নামের একটি অপশন পাওয়া যায়, যেটি ব্যবহার করে কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করা যায়।
 
অতিরিক্ত ক্যশ জমা হওয়ার কারণে ব্রাওজার স্লো কাজ করে। যখন কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা হয় তখন তা মেমোরির একটি অংশ দখল করে রাখে। পরে অন্য সাইট খুললেও ক্যাশ মেমোরি আগের ওয়েবসাইটটি মনে রাখে এবং কম্পিউটারের গতি হ্রাস করে। তাই ব্রাউজিং হিস্ট্রি ডিলিট করে ক্যাশ মেমোরি পরিছন্ন রাখুন।
 
ব্রাউজিং হিস্ট্রি ডিলিট করার জন্য ব্রাউজারের মেনু থেকে সিলেক্ট করুন History> Show All History Library নামে একটি উইন্ডো ওপেন হবে। এতে প্রদর্শিত ফাইলগুলো ডিলিট করে ক্যাশ মেমোরি ফ্রি রাখুন।
 
অনেক সময় আমরা অপ্রয়োজনীয় অনেক সফটওয়ার ইনস্টল করে রাখি, যার ফলে কম্পিউটার স্লো হয়ে যায়। যেসব প্রোগ্রাম আপনি কখনোই ব্যবহার করেন না কিংবা আগে ব্যবহার করতেন কিন্তু এখন ব্যবহার করেন না, এ ধরনের প্রোগ্রাম সিস্টেম থেকে রিমোব বা আনইনস্টল করে ফেলুন। ফলে সিস্টেমের ফ্রি স্পেস বেড়ে যাবে এবং গতি বৃদ্ধি পাবে।
 
অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম আনইনস্টল করার জন্য Start>Control Panel> Add Or remove programs এ ক্লিক করুন। একটি উইন্ডো ওপেন হবে। সেখান থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামটির নামের ওপর ডাবল ক্লিক করে প্রোগ্রামটি সিস্টেম থেকে রিমুব করে দিন।
 
কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করার জন্য RAM এর ভূমিকা গুরুত্ব পূর্ণ। উচ্চ গতিসম্পন্ন কম্পিউটারের স্বাদ পেতে RAM এর কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনার কম্পিউটারের RAM যদি কম থাকে তাহলে RAM বৃদ্ধি করে কম্পিউটারের স্পিড কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিতে পারেন। RAM বাড়ানোর ফলে মাল্টিটাস্কিং অর্থাৎ এক সঙ্গে অনেকগুলো প্রোগ্রাম অনায়েসে রান করতে পারবেন এবং ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর গতি বৃদ্ধি পাবে।

 

হার্ডডিস্কের ড্রাইব ডিফ্র্যাগ করে কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি করা যায়। ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টার কম্পিউটারের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ডাটাগুলো এক জায়গায় এনে পিসির পারফরমেন্স বা অ্যাকসেস গতি বাড়িয়ে দেয়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ডিস্ক ডিফ্র্যাগ করলে সিস্টেমের গতি অনেক বেড়ে যায়।

 
এজন্য  Start মেনু থেকে Accessories>System>Tools>Disk Defragmenter-এ ক্লিক করুন। ডিস্ক ডিফ্র্যাগ উইন্ডো অপেন হবে। এতে ড্রাইব সিলেক্ট করে Start বাটনে ক্লিক করুন। ডিস্ক ডিফ্র্যাগ শুরু হয়ে যাবে এবং কিছু সময় নিবে।

 

হার্ডডিস্কের ড্রাইব ফুল হয়ে যাওয়ার কারণেও কম্পিউটারের গতি হ্রাস পায়। তাই প্রত্যেক ড্রাইবের ফ্রি স্পেস ১০ জিবির উপরে খালি রাখুন। এতে সিস্টেমের ফারফরমেন্স ঠিক থাকবে।

আরও পড়ুন

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url